সাম্প্রতিক পোস্ট

লোড হচ্ছে…

সকল পোস্ট

  • জাঞ্জ বিদ্রোহ (Zanj Rebellion) (৮৬৯-৮৮৩ খ্রি.): লোনাজলে রক্তে লেখা এক বিস্মৃত ইতিহাসের আখ্যান
    জাঞ্জ বিদ্রোহ (Zanj Rebellion) (৮৬৯-৮৮৩ খ্রি.): লোনাজলে রক্তে লেখা এক বিস্মৃত ইতিহাসের আখ্যান

    আব্বাসীয় খিলাফতের স্বর্ণযুগের আলোর নিচেই ছিল নিকষ কালো অন্ধকার। নবম শতাব্দীতে দক্ষিণ ইরাকের লবণাক্ত জলাভূমিতে পূর্ব আফ্রিকা থেকে আনা ‘জাঞ্জ’ নামক দাসদের অকল্পনীয় শোষণ এই বিদ্রোহের জন্ম দেয়। আলী ইবনে মুহাম্মদের নেতৃত্বে তারা প্রায় পনেরো বছর ধরে এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে লিপ্ত হয়, যা কেবল একটি সাম্রাজ্যের ভিতই কাঁপিয়ে দেয়নি, বরং জন্ম দিয়েছিল নিজস্ব রাষ্ট্র ‘আল-মুখতারা’র। বসরা নগরীর ধ্বংসযজ্ঞ থেকে শুরু করে গেরিলা যুদ্ধের অবিশ্বাস্য রণকৌশল – এই আখ্যান কেবল একটি দাস বিদ্রোহের নয়, বরং ইতিহাসের বিস্মৃত পাতা থেকে উঠে আসা এক লোনা দীর্ঘশ্বাসের গল্প, যা সভ্যতার চাকচিক্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কদর্য রূপকে উন্মোচিত করে।

  • সামারার নৈরাজ্য (Anarchy at Samarra) (৮৬১-৮৭০ খ্রি.): ইতিহাসের ধুলো, ক্ষমতার নগ্ন খেলা আর এক মৃত্যু উপত্যকা
    সামারার নৈরাজ্য (Anarchy at Samarra) (৮৬১-৮৭০ খ্রি.): ইতিহাসের ধুলো, ক্ষমতার নগ্ন খেলা আর এক মৃত্যু উপত্যকা

    নবম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খিলাফতের ইতিহাসে এক অন্ধকার অধ্যায়ের সূচনা হয়, যা ‘সামারার নৈরাজ্য’ নামে পরিচিত। ৮৬১ থেকে ৮৭০ খ্রিষ্টাব্দের এই নয় বছরে চারজন খলিফাকে তাদের নিজস্ব তুর্কি রক্ষীবাহিনী নির্মমভাবে হত্যা বা ক্ষমতাচ্যুত করে। যে সামারা শহর তৈরি হয়েছিল ‘আনন্দ নগরী’ হিসেবে, তা পরিণত হয় ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসঘাতকতা আর রক্তের এক মৃত্যু উপত্যকায়। এই আর্টিকেলটি কোনো ধর্মীয় আখ্যান নয়, বরং ক্ষমতার লাগামহীন লোভ, সামরিক বাহিনীর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং একটি সাম্রাজ্যের ভেতর থেকে ক্ষয়ে যাওয়ার এক নিখাদ পলিটিক্যাল থ্রিলার, যা ইতিহাসের এক ট্র্যাজিক সত্যকে উন্মোচিত করে।

  • ইসলামী স্বর্ণযুগ (Islamic Golden Age): বিস্মৃতির ধুলো সরিয়ে জ্ঞানের আলোর খোঁজে
    ইসলামী স্বর্ণযুগ (Islamic Golden Age): বিস্মৃতির ধুলো সরিয়ে জ্ঞানের আলোর খোঁজে

    যখন ইউরোপ ‘অন্ধকার যুগে’ নিমজ্জিত, তখন অষ্টম থেকে চতুর্দশ শতাব্দী পর্যন্ত বাগদাদ থেকে কর্ডোবা পর্যন্ত এক জ্ঞানভিত্তিক সভ্যতা জেগে উঠেছিল। এই ইসলামী স্বর্ণযুগে পণ্ডিতরা কেবল গ্রিক জ্ঞানের মশাল রক্ষা করেননি, বরং তাতে নতুন তেল ঢেলে তাকে আরও উজ্জ্বল করেছিলেন। গণিত, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা, দর্শন ও প্রকৌশলে তাদের যুগান্তকারী অবদান পরবর্তীকালে ইউরোপীয় রেনেসাঁ ও আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের কৌতূহল, যুক্তি ও বহুসাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের এক মহাকাব্য এই স্বর্ণযুগ, যা ইতিহাসের এক প্রায়-বিস্মৃত অথচ গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়, যার উত্তরাধিকার আজও আধুনিক বিশ্বকে আলোকিত করে রেখেছে।

  • আব্বাসীয় খিলাফত (Abbasid Caliphate): ইতিহাসের সোনালী মরীচিকা এবং ক্ষমতার দাবাখেলা
    আব্বাসীয় খিলাফত (Abbasid Caliphate): ইতিহাসের সোনালী মরীচিকা এবং ক্ষমতার দাবাখেলা

    আব্বাসীয় খিলাফতের ৫০০ বছরের ইতিহাস এক সোনালী মরীচিকা – একই সাথে জ্ঞান-বিজ্ঞানের মহাবিস্ফোরণ এবং ক্ষমতার নিষ্ঠুরতম খেলার মহাকাব্য। উমাইয়াদের বিরুদ্ধে এক সফল বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে তারা বাগদাদে গড়ে তোলে বায়তুল হিকমাহ, যা সভ্যতাকে আলোকিত করে। কিন্তু সেই আলোর নিচেই ছিল হারুনুর রশীদের স্বৈরাচার, ভাইয়ে-ভাইয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং তুর্কি মামলুকদের উত্থানের মতো গাঢ় অন্ধকার। এই আর্টিকেল আব্বাসীয়দের সেই দ্বৈত সত্তাকে ব্যবচ্ছেদ করে – যেখানে অ্যারিস্টটলের দর্শন আর জল্লাদের তরবারি পাশাপাশি চলত – এবং দেখায় কীভাবে এই গৌরবময় সভ্যতা অভ্যন্তরীণ ক্ষয়ের ফলে ১২৫৮ সালে মঙ্গোল আক্রমণে ধুলোয় মিশে গিয়েছিল।

  • লজিক বা যুক্তিবিদ্যা (Logic): অবিন্যস্ত পৃথিবীতে বিন্যাসের খোঁজ
    লজিক বা যুক্তিবিদ্যা (Logic): অবিন্যস্ত পৃথিবীতে বিন্যাসের খোঁজ

    মহাবিশ্বের বিশাল বিশৃঙ্খলার মাঝে মানুষের মস্তিষ্ক বিন্যাস খোঁজে, আর এই খোঁজের প্রধান হাতিয়ার হলো যুক্তিবিদ্যা বা লজিক। এই লেখাটি কেবল যুক্তির সংজ্ঞা বা ইতিহাসেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি এক ব্যবহারিক টুলবক্স যা আমাদের অপরিচ্ছন্ন চিন্তাকে শৃঙ্খলিত করতে শেখায়। সত্য ও বৈধতার পার্থক্য, ডিডাকশন ও ইন্ডাকশনের পথ, এবং চিন্তার সাধারণ ভুল (ফ্যালাসি) থেকে শুরু করে আমাদের মস্তিষ্কের গভীরে থাকা পক্ষপাত (কগনিটিভ বায়াস) – সবকিছুই এখানে আলোচিত। চূড়ান্তভাবে, এটি কুসংস্কারের অন্ধকারে যুক্তিবাদের মশাল জ্বালিয়ে সত্য অনুসন্ধানের এক বুদ্ধিবৃত্তিক অভিযাত্রা, যা আমাদের নির্ভুলভাবে চিন্তা করতে এবং প্রতারণার ফাঁদ এড়াতে সাহায্য করে।

  • ইসলাম, সঙ্গীত ও সুরের দ্বন্দ্ব: এক ঐতিহাসিক ও তাত্ত্বিক পরিভ্রমণ
    ইসলাম, সঙ্গীত ও সুরের দ্বন্দ্ব: এক ঐতিহাসিক ও তাত্ত্বিক পরিভ্রমণ

    ইসলাম ও সঙ্গীতের সম্পর্ক এক দীর্ঘ ও জটিল ঐতিহাসিক উপাখ্যান। চৌদ্দশ বছর ধরে এই বিতর্ক মুসলিম বিশ্বকে আলোড়িত করেছে – কখনও সুরকে দেখা হয়েছে আত্মার খোরাক বা স্বর্গীয় অনুপ্রেরণা হিসেবে, আবার কখনও শয়তানের প্রলোভন হিসেবে। পবিত্র ধর্মগ্রন্থের নীরবতা ও হাদিসের ভিন্নমুখী ব্যাখ্যা এই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আল-গাজ্জালি বা রুমির মতো সুফিরা যেখানে সুরের মাঝে স্রষ্টাকে খুঁজেছেন, সেখানে ইবন তাইমিয়ার মতো পণ্ডিতরা একে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই প্রবন্ধে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সুফি ও দরবারি ঐতিহ্য, সুরের তাত্ত্বিক ব্যাকরণ এবং আধুনিক যুগের সালাফি মতবাদ থেকে হিপ-হপের বিদ্রোহ পর্যন্ত – সুর ও শরিয়তের এই চিরন্তন দ্বন্দ্ব ও মিথস্ক্রিয়াকে এক নিরপেক্ষ ও তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

  • ধর্মনিরপেক্ষতা (Secularism): রাষ্ট্র, ধর্ম আর ব্যক্তির স্বাধীনতার এক গোলকধাঁধা
    ধর্মনিরপেক্ষতা (Secularism): রাষ্ট্র, ধর্ম আর ব্যক্তির স্বাধীনতার এক গোলকধাঁধা

    ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটি এক জটিল গোলকধাঁধা। কারো কাছে বন্ধু, কারো চোখে শত্রু। এটি কি ধর্মহীনতা, নাকি বহুত্ববাদী সমাজের রক্ষাকবচ? এই লেখাটি প্রচলিত ভুল ধারণাগুলো ভেঙে এর গভীরে প্রবেশ করেছে। ইউরোপের রক্তাক্ত ধর্মীয় যুদ্ধ থেকে জন্ম নেওয়া এই দর্শনের ঐতিহাসিক পথচলা, ফ্রান্স থেকে ভারত পর্যন্ত এর নানা রূপ এবং আধুনিক রাষ্ট্রে এর অপরিহার্য প্রয়োজনীয়তা এখানে তুলে ধরা হয়েছে। একইসাথে, এর সীমাবদ্ধতা, প্রায়োগিক ব্যর্থতা এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর সংকটপূর্ণ যাত্রাও নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এটি কোনো সহজ রায় নয়, বরং রাষ্ট্র, ধর্ম ও ব্যক্তির স্বাধীনতাকে নতুন করে বোঝার এক দীর্ঘ অনুসন্ধানী যাত্রা।

  • ইভাঞ্জেজেলিকাল খ্রিস্টধর্ম বা ইভাঞ্জেলিকালিজম (Evangelicalism): এক অচেনা শব্দের সহজ পাঠ
    ইভাঞ্জেজেলিকাল খ্রিস্টধর্ম বা ইভাঞ্জেলিকালিজম (Evangelicalism): এক অচেনা শব্দের সহজ পাঠ

    ইভানজেলিক্যালিজম – এই অচেনা শব্দটি কোনো নির্দিষ্ট গির্জা নয়, বরং প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টধর্মের এক বিশাল আন্দোলন। এর ভিত্তি চারটি মূল স্তম্ভের ওপর: বাইবেলের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব, যিশুর ক্রুশীয় আত্মত্যাগ, ব্যক্তিগত ‘নবজন্মের’ অভিজ্ঞতা এবং বিশ্বাসকে কর্মে রূপ দেওয়ার সক্রিয়তা। এই লেখাটি এর গভীর ঐতিহাসিক শেকড় থেকে শুরু করে আধুনিক যুগে এর বিস্ময়কর বৈচিত্র্য, বিতর্ক এবং আমেরিকার রাজনীতিতে এর শক্তিশালী ভূমিকা তুলে ধরেছে। এক কথায়, প্রায়শই ভুলভাবে উপস্থাপিত এই জটিল বিশ্বব্যাপী আন্দোলনটিকে সহজভাবে বোঝার একটি পূর্ণাঙ্গ পাঠ এটি, যা এর আধ্যাত্মিকতা ও রাজনৈতিক প্রভাব – উভয় দিকই উন্মোচন করে।

  • বিবর্তনের আধুনিক অগ্রগতি: প্রাণের অতলান্ত যাত্রা ও বিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত
    বিবর্তনের আধুনিক অগ্রগতি: প্রাণের অতলান্ত যাত্রা ও বিজ্ঞানের নতুন দিগন্ত

    চার্লস ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন থেকে শুরু করে আজকের জিন এডিটিং প্রযুক্তি – বিবর্তনের বিজ্ঞান এক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে। এই যাত্রায় যুক্ত হয়েছে জেনেটিক্সের গাণিতিক সূত্র, আণবিক স্তরের নিরপেক্ষ পরিবর্তন, এবং ভ্রূণের বিকাশে জিনের জাদুকরি খেলা। আধুনিক বিজ্ঞান আমাদের দেখিয়েছে, বিবর্তন কেবল টিকে থাকার লড়াই নয়; এটি জিন, পরিবেশ ও সংস্কৃতির এক জটিল মিথস্ক্রিয়া। প্রাচীন হাড় থেকে ডিএনএ উদ্ধার করে আমরা জানছি আমাদের হারিয়ে যাওয়া আত্মীয়দের কথা। এপিজেনেটিক্স প্রমাণ করেছে, আমাদের জীবনাচরণ পরবর্তী প্রজন্মকেও প্রভাবিত করে। আর এখন, মানুষ নিজেই তার বিবর্তনের চালক হয়ে উঠছে। এই লেখাটি বিজ্ঞানের সেই বিস্ময়কর অগ্রগতির এক বিস্তারিত দলিল।

  • ধর্ম ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (Religion and International Relations): এক অদৃশ্য সুতার পাঠোদ্ধার
    ধর্ম ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (Religion and International Relations): এক অদৃশ্য সুতার পাঠোদ্ধার

    আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তাত্ত্বিকরা দীর্ঘদিন ধর্মকে উপেক্ষা করে রাষ্ট্র ও ক্ষমতার লড়াইকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। কিন্তু বিশ্বরাজনীতির মঞ্চে ধর্ম আজ এক অনিবার্য ও শক্তিশালী কুশীলব। এই প্রবন্ধে ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ তত্ত্বের’ সংকট এবং আধুনিক বিশ্বে ধর্মের নাটকীয় প্রত্যাবর্তনের কারণ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। হান্টিংটনের ‘সভ্যতার সংঘাত’ থেকে শুরু করে ধর্মীয় কূটনীতি – সবই এখানে আলোচিত। ধর্ম কীভাবে একই সাথে পরিচয়ের সংঘাত উস্কে দেয় আবার শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে, তার এক নিরপেক্ষ ব্যবচ্ছেদ এই লেখা। মধ্যপ্রাচ্য থেকে দক্ষিণ এশিয়া পর্যন্ত ভূ-রাজনীতির জটিল সমীকরণে ধর্মের অদৃশ্য সুতাটি কীভাবে কাজ করে, তা বুঝতে এই প্রবন্ধ এক অপরিহার্য পাঠ।