জ্ঞানকোষ — about atheism — নসতকর কমন পরমণ চয়

ঈশ্বরের অস্তিত্বের সপক্ষে নাস্তিকরা কেমন প্রমাণ চায়?

যখন আমরা নাস্তিকরা আস্তিক বা মুমিনদের কাছে ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ চেয়ে থাকি, তখন সাধারণত তারা আমাদের প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তিকর উত্তর দিয়ে থাকেন। তাদের মধ্যে অনেকে আমাদের বলেন, "আপনি কী ধরনের প্রমাণ চান?" বা "আপনাকে কী প্রমাণ দিলে আপনি বিশ্বাস করবেন?"

এই কথাগুলো শুনে মনে হয় যেন তাদের কাছে প্রমাণের একটি বিপুল ভাণ্ডার রয়েছে, তাই তারা বুঝে উঠতে পারছেন না, ঠিক কোন প্রমাণ আমাদের জন্য উপযুক্ত হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, তাদের কাছে কোনো রকম বিন্দু পরিমাণ প্রমাণও নেই, বরং তারা এই প্রশ্নটি করছেন একটি ঠগবাজির খেলার ভূমিকা হিসেবে।

যখন আমরা আরও স্পষ্টভাবে জানতে চাই, "আপনার কাছে যদি অনেক প্রমাণ থাকে, তাহলে এমন একটি অবজেক্টিভ বা বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দিন যা ঈশ্বরের অস্তিত্বকে সমর্থন করে," তখন তারা সোজাসুজি উত্তর না দিয়ে, সাধারণত কিছু অপ্রাসঙ্গিক গল্প বা উদাহরণ দিতে শুরু করেন।

যেমন, তারা হয়তো বলতে শুরু করে সেই গর্ভে দুইজন যমজ বাচ্চাদের কথাপকথোনের গপ্প। কিংবা, "আপনার বাবা যে আসলেই আপনার জন্মদাতা, তার প্রমাণ কী?" অথবা, "আপনার যেই আসলেই মস্তিষ্ক বলে কিছু আছে, সেটি আপনি প্রমাণ করতে পারবেন?" আরও উদাহরণ হিসেবে তারা প্রশ্ন করতে থাকেন, "আপনি কীভাবে প্রমাণ করবেন যে পৃথিবী গোলাকার?" এসব প্রশ্ন আসলে যে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সপক্ষে কোন প্রমাণ নয়, বরঞ্চ কেন প্রমাণ ছাড়াই কোন দাবীকে আমাদের মেনে নেয়া উচিত, সেগুলোই বোঝানোর চেষ্টা। তাই প্রমাণ দেয়ার ছদ্মবেশে উনারা এই ধরণের ঠগবাজির আশ্রয় নিয়ে থাকেন।

এই ধরনের প্রশ্ন বা গল্পের মাধ্যমে মুমিন বা আস্তিকরা আসলে বোঝাতে চান যে, নাস্তিকদেরও অনেক কিছু প্রমাণ ছাড়াই বিশ্বাস করে। তারা চান, নাস্তিকরা যেন প্রমাণের ক্ষেত্রে একরকম কঠোর না হয়ে প্রমাণ ছাড়াই উনাদের ঈশ্বরের অস্তিত্ব মেনে নেন। উদাহরণ হিসেবে উনারা কিছু কিছু বিষয়ের অবতারণা করে দেখাতে চেষ্টা করেন যে, এই ক্ষেত্রে নাস্তিকরা অন্ধবিশ্বাস করছে, সুতরাং অন্ধবিশ্বাস করাতি খারাপ কিছু নয়, উনারা এটি প্রমাণ করতেই চেষ্টা করতে থাকেন।এই ধরণের প্রস্তাবনা দিয়ে তারা প্রমাণ করতে চান যে, ঈশ্বর বা আল্লাহর অস্তিত্বের বিষয়ে কোনো প্রমাণ না থাকলে কী আসে যায়! তারা মনে করেন, যেমন নাস্তিকরা প্রমাণ ছাড়া কিছু কিছু বিষয় বিশ্বাস করেন, তেমনই তারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব মেনে নিতেই পারেন। এত প্রমাণের প্রয়োজন কী?

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে আসে। তর্কের খাতিরে ধরে নিই, কোন নাস্তিক কোন কিছুকে অন্ধবিশ্বাস করে বা প্রমাণ ছাড়াই মেনে নেয়। কিন্তু কোন নাস্তিক যদি কোনো কিছু প্রমাণ ছাড়া মেনে নেয়, তবে সেটিও তো অন্ধবিশ্বাসই হলো। সেটি তো কোন প্রমাণ হলো না। কোন নাস্তিক কোন কিছু অন্ধবিশ্বাস করছে, এ থেকে তো প্রমাণ হয় না, ঈশ্বরের অস্তিত্ব রয়েছে। এ থেকে শুধু এটিই প্রমাণ হয়, ঐ নাস্তিক কোন একটি বিষয়ে অন্ধবিশ্বাস করছে।

একধরনের অন্ধবিশ্বাস অন্য আরেকটি অন্ধবিশ্বাসকে জাস্টিফাই করতে পারে না। কোন নাস্তিক যদি কোন কিছু প্রমাণ ছাড়াই মেনে নেয়, তাতে প্রমাণ ছাড়া মেনে নেয়ার যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠিত হয় না। কোনো নাস্তিক যদি কিছু বিষয় মেনে নেয় যেগুলোর প্রমাণ নেই, সেগুলোকে অন্ধবিশ্বাস হিসেবেই চিহ্নিত করতে হবে। আর সেটি ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে না। ফলে, কোনো বিষয়ে প্রমাণ না থাকলে তার অস্তিত্ব বা সত্যতা মেনে নেওয়া যৌক্তিক নয়, এবং নাস্তিকরাও কোন বিষয়ে অন্ধ বিশ্বাস করছে, এটি প্রমাণ করা গেলেই প্রমাণ হয় না যে, ঈশ্বর বা আল্লাহর অস্তিত্ব আছে।

এর মধ্যে মূলত একটি গভীর বিষয় রয়েছে, যা এই আলোচনার মধ্যে আরও স্পষ্ট হওয়া উচিত: অন্ধবিশ্বাসকে আরেকটি অন্ধবিশ্বাস দিয়ে জায়েজ করা যায় না।অন্ধবিশ্বাসকে যত অন্ধবিশ্বাস দিয়েই গুণ দেবেন, ঐ অন্ধবিশ্বাসই থাকবে। যুক্তি হয়ে যাবে না।

এবারে আসুন, এই প্রসঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নেয়া যাক,